মনের আয়না !!



আমি তাকে আমার আয়না বলে ডাকতাম, মনের আয়না। কখনো যদি নিজেকে বুঝতে না পারতাম তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই হতো। চেহারা দেখেই মনের খবর বলে দিতে পারতেন।
কথা না শুনলে, বেশী দুষ্টামি করলে তিনি প্রায়ই বলতেন আজকে বুঝবে না, যেদিন মাথার উপরে ছায়া থাকবে না সেদিন ঠিকই বুঝবে!
হুম, গত সাত বছর তাই বুঝতে পারছি। প্রতি মুহুর্তে বুঝতে পারছি ছায়া না থাকার যন্ত্রণা। মাঝে মাঝে মনে হয় – অসুস্থ থাকতেন তবু বেঁচে থাকতেন আমাদের সাথে।
আমার আয়না, আমার বন্ধু, আমার আবদারের যায়গা, আমার বাবাটা যাকে একদিন না দেখে থাকতে পারতাম না আজকে ৭ বছর তাকে না দেখে দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছি। প্রথম যখন শুনলাম তাঁর হার্টে ব্লক ধরা পরেছে তখন ভেবেছিলাম এই মানুষটা না থাকলে বেঁচে থাকার মানেই হয় না, আমিও তাঁর সাথে চলে যাবো। কিন্তু বাস্তবতা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, প্রতি পদক্ষেপে তাঁর না থাকার অর্থটা বুঝিয়ে দিচ্ছে। হাটতে গিয়ে হোঁচট খেলে কেউ আর এখন হাত ধরে টেনে তুলে না নিজেকেই উঠতে হয়, ধুলো বালি ঝেড়ে আবার হাটতে হয়!
অনেক সময় দেখি অনেকেরই অভিযোগ – আব্বু-আম্মু আমাকে বুঝে না। বাবার সাথে আমার অনেক দূরত্ব। তাদের জিজ্ঞাস করতে ইচ্ছা হয় তুমি কতোটুকু তোমার বাবা-মা’কে বুঝতে চেষ্টা করেছো? কবে নিজ থেকে বাবার সাথে দূরত্ব কমানোর চেস্টা করেছ? আসলে আমরা সন্তানরা খুবই স্বার্থপর, বাবা-মা’র কাছ থেকে নেয়ার জন্যই অস্থির থাকি, কতোটা দিতে পারলাম সেই হিসাবের সময় কই?
- আফরীণ ইসলাম

0 comments:

Post a Comment